This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.

Thursday, December 15, 2016

সম্ভাবনার আরেক নাম উট পাখির খামার


উটপাখি (ইংরেজি:
Ostrich, Common Ostrich, বৈজ্ঞানিক নাম: Struthio camelus), এক প্রকারের বৃহৎ, উড্ডয়নে অক্ষম পাখি। প্রজাতিটি Struthionidae (স্ট্রুথিওনিডি) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Struthio (স্ট্রুথিও) গণের অন্তর্গত। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের তৃণভূমি এদের বিচরণস্থল। এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ৯৯ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস।[২] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।
কিউই, রিয়া, এমু, কেসোয়ারি প্রভৃতি উড়তে অক্ষম পাখিদের মত উটপাখিও Struthioniformes (স্ট্রুথিওনিফর্মিস) বর্গের অন্তর্গত। অনেক বিষয়েই এরা পক্ষীজগতে সেরা। সবচেয়ে উঁচু (৩ মিটার), সবচেয়ে ওজনদার (১৫০ কেজি), সবচেয়ে দৌড়বাজ (৭০ কিমি/ঘন্টা) পাখি।[৪] ভূচর পাখিদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে দ্রুতগামী।[৫] ডিম সবচেয়ে বড় (দেড় কেজি)। একমাত্র পাখি যার পায়ে দুটি মাত্র আঙুল রয়েছে।
খাদ্যাভ্যাসের দিক থেকে উটপাখি তৃণভোজী হলেও এটি প্রায়ই অমেরুদণ্ডী প্রাণী শিকার করে। এরা দলবদ্ধ জীব। ৫ থেকে ৫০টি সদস্যের যাযাবর দলে এরা ঘুরে বেড়ায়। হরিণ, জেব্রা, নু প্রভৃতির সাথেও দল বেঁধে বিচরণ করে। বিপদে পড়লে উটপাখি সাধারণত শুয়ে লুকিয়ে পড়ে অথবা দৌড়ে পালিয়ে যায়। কোণঠাসা হয়ে পড়লে শক্তিশালী পা দিয়ে লাথি দেয় বা শক্ত ঠোঁট দিয়ে ঠোকর দেয়। অঞ্চলভেদে প্রজননে বিভিন্নতা দেখা দেয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পুরুষ তার নিজস্ব এলাকা দখল করে ফেলে এবং তার হারেমে দুই থেকে সাতটি স্ত্রী উটপাখি থাকে।
বিশ্বে উটপাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশ্ববাজারে এর চামড়া, মাংস, পালক ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
বাণিজ্যিকভাবে উটপাখি পালন ............................
বাণিজ্যিকভিত্তিতে হাঁস, মুরগি, কোয়েল, কবুতর ও বিভিনড়ব বাহারী পাখি প্রতিপালন আমাদের দেশে মোটামুটি একটি প্রতিষ্ঠিত শিল্প হিসাবে ইতোমধ্যেই স্বীকৃতি লাভ করেছে; কিন্তু উটপাখি পালনও যে ব্যবসায়িক দিক থেকে অনুরূপ একটি শিল্প হিসাবে পরিগণিত হতে পারে সে বিষয়টি অদ্যাবধি সম্ভবত বিবেচনায় আনা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর বহু দেশে উটপাখির খামার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। উটপাখির পালক অত্যন্ত মূল্যবান যা মূলত সাজসজ্জার কাজে ব্যবহৃত হয়। এদের চামড়াও খুব মূল্যবান এবং এদের মাংস আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
ইংরেজি পরিভাষায় উটপাখিকে Octrich বলা হয় এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Struthio camelis । পক্ষীকুলের মধ্যে উটপাখি হচ্ছে সর্ববৃহৎ এবং এদের ডিমও আকারে সর্বাপেক্ষা বড়ো হয়ে থাকে। একটি বয়স্ক উটপাখির ওজন ৬৩-১৩০ কেজি (১৪০-২৯০ পাউন্ড) হয়ে থাকে তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি পুরুষ উটপাখির ওজন ১৫৫ কেজি (৩৪০ পাউন্ড) পর্যন্ত হতে পারে। পরিণত বয়স্ক পুরুষ উটপাখির দেহের পালক সাধারণত কালো বর্ণের হয় এবং প্রাথমিক ও লেজের পালক সাদা বর্ণের হয়। স্ত্রী জাতীয় ও কম বয়সী পুরুষ উটপাখির দেহের পালক ধূসর-বাদামী ও সাদা বর্ণের হয়ে থাকে। পুরুষ ও স্ত্রী উভয় জাতীয় উটপাখির গলা প্রায় পালকশূন্য থাকে।
দীর্ঘ গলা ও পা এদের মাথাকে ভূমি থেকে প্রায় ১.৮-২.৭৫ মিটার উচ্চে রাখে এবং এদের চক্ষু ভূমিতে বিচরণশীল সকল মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে সর্বপেক্ষা বৃহৎ বলে জানা যায়। এই বৃহৎ চক্ষুর জন্য এরা এদের শত্র“কে বহু দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এদের পা খুব শক্তিশালী হয় এবং অন্যান্য পাখিদের ন্যায় তা পালকশূন্য ও আঁশযুক্ত হয়ে থাকে। এদের পায়ে মাত্র দুইটি আঙ্গুল থাকে (অধিকাংশ পাখির থাকে চারটি) যার মধ্যে বড়োটি নখরযুক্ত এবং বাইরের দিকেরটি নখরশূন্য হয়। উভয় পাখা বিস্তার করলে তা প্রায় দুই মিটার (ছয় ফুটের অধিক) বিস্তৃত হয়। এই পাখা দ্বারা এরা বাচ্চাদেরকে ছায়া দান করে। উটপাখির ঠোঁট চেপ্টা ও চওড়া এবং মাথা একটু বাঁকানো। এদের খাদ্যথলি ও পিত্তথলি নেই। অন্যান্য পাখিদের ন্যায় বিষ্ঠার সাথে মূত্র নিষ্ক্রান্ত হয় না বরং এরা পৃথকভাবে মূত্র নিষ্কাষণ করে থাকে।
উটপাখি যৌন পরিপক্কতা লাভ করে ২-৪ বছর বয়সে। এ সময় পুরুষ পাখির উচ্চতা হয় ১.৮-২.৮ মিটার (৫.৯-৯.২ ফুট) এবং স্ত্রী উটপাখির উচ্চতা হয় ১.৭-২.০ মিটার (৫.৬-৬.৬ ফুট) । প্রথম দুই বছরে বাচ্চার বৃদ্ধি ঘটে প্রতি মাসে প্রায় ২৫ সেমি (৯.৮ ইঞ্চি) করে এবং এক বছর বয়সে একটির ওজন প্রায় ৪৫ কিলোগ্রাম (৯৯ পাউন্ড) হয়।
উটপাখির প্রাপ্তিস্থান আগে আফ্রিকার উত্তর, সাহারা অঞ্চলের দক্ষিণ, পূর্ব আফ্রিকা, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের বনভূমি এবং এশিয়া মাইনরে উটপাখির আবাসভূমি ছিল। পরবর্তী পর্যায়ে এরা আফ্রিকার উন্মুক্ত অঞ্চলের তৃণভূমিতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার আধা-মরুভূমি অথবা মরুভূমি এলাকায় বিচরণ শুরু করে।
উটপাখির আচরণ উটপাখি শীতকালে সাধারণত জোড়াবদ্ধ বা একাকী থাকে। প্রজনন ঋতু বা অত্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে এরা ৫ থেকে ৫০টি একত্রে বিচরণ করে যার মধ্যে একটি স্ত্রী উটপাখি রাণীর পদমর্যাদায় থাকে। এরা সাধারণত জেব্রা বা হরিণের সাথে বিচরণ করে। দিবাভাগে এরা চারণভূমিতে থাকে তবে জ্যোৎনালোকিত রাতেও এরা প্রায়শ ঘোরাঘুরি করে থাকে। এদের রয়েছে প্রখর দৃষ্টি ও শ্রবণ শক্তি যার দ্বারা এরা সিংহ বা অন্য হিংস্র প্রাণীর আগমন বহু দূর থেকেই টের পায়। হিংস্র প্রাণী কর্তৃক ধাবিত হলে এরা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ঘন্টায় ৭০ কিমি বা প্রায় ৪৪ মাইল বেগে দৌড়াতে পারে। পৃথিবীতে দুই পা বিশিষ্ট প্রাণীদের মধ্যে এরাই সর্বাপেক্ষা বেশি দ্রুতগ্রামী।
দৌড়ানোর সময় এদের দুই পাখাকে “রাডার” হিসাবে ব্যবহার করে বলে এরা দ্রুত এদের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। এ সময় লম্বা এক পদক্ষেপে এরা ১০-১৫ ফিট (৩-৫ মিটার) দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। ভূমিতে বিচরণশীল প্রাণীদের মধ্যে উটপাখি হচ্ছে দ্বিতীয় দ্রুতগ্রামী প্রাণী। আক্রান্ত হলে এরা মাটিতে শুয়ে মাথা ও গলা এমনভাবে বিছিয়ে দেয় যে তখন দূর থেকে তা মাটির টিবির মতো মনে হয়। শত্রু থেকে রক্ষা পাবার জন্য এরা এদের পা ব্যবহার করে। পায়ের লাথিতে শত্রু আহত হয় এবং অনেক সময় তাদের মৃত্যুও ঘটতে পারে।
খাদ্য ব্যবস্থা উটপাখি প্রধানত তৃণলতা, ঘাস, দানাদার খাদ্য, ফল ও ফুল ভক্ষণ করে। অবশ্য এরা মাঝে-মধ্যে পোকা-মাকড়ও ভক্ষণ করে থাকে।
বাণিজ্যিকভাবে উটপাখি প্রতিপালনের ক্ষেত্রে পিলেটেড পোল্ট্রি খাদ্য খাওয়ানো হয়। দৈহিক বৃদ্ধি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খাদ্য ব্যবস্থাপনা হচ্ছে নিুরূপঃ
২০-২৪% ক্রুড প্রোটিন
১২-১৯% ক্রুড ফাইবার
১.২-২% ক্যালসিয়াম
০.৬-১.১% ফসফরাস
১০,০০০-১৫,০০০ আই ইউ/ কেজি ভিটামিন এ
১,৫০০-২,৫০০ আই ইউ/কেজি ভিটামিন ডি (ড্রাই ম্যাটারের ভিত্তিতে)
প্রজননের জন্য উটপাখির খাদ্যের ফর্মূলা একই তবে এই সাথে ক্যালসিয়াম ২.৮% হারে প্রদান করতে হয়।
পিলেটেড ফিডের সাথে সবুজ কচি শাক-সবজি সরবরাহ করতে হবে। এছাড়াও এদের খাদ্যের সাথে অতিরিক্ত ট্রেস ইলিমেন্টস্ সংযোজন করতে হয়।
উটপাখির মাংসের বৈশিষ্ট্য ১. এদের মাংসে ৩% এরও কম ফ্যাট থাকে।
২. মাংস সংগৃহীত হয় সাধারণত ঊরু, পা এবং পিঠ থেকে।
৩. ভূমিতে বিচরণশীল অন্যান্য প্রাণীদের থেকে এদের খাদ্য রূপান্তর দক্ষতা অনেক উচ্চ মানের।
৪. এদের মাংসে যে ফ্যাট থাকে তা আনস্যাচুরেটেউ ফ্যাটি এসিড।
অন্যান্য প্রাণীর মাংসের তুলনায় উটপাখির মাংসে চর্বির পরিমাণ কম থাকায় তা দ্রুত রানড়বা করা যায়। এদের মাংসে সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ কম থাকাতে পুষ্টিবিদগণ উটপাখির মাংস গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
মুরগির ন্যায় এরাও খাদ্য হজমের জন্য পাথরের টুকরা ভক্ষণ করে। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক উটপাখির পাকস্থলীতে প্রায় ১ কেজি পাথর থাকে। এগুলো গিজার্ডে খাদ্য ভাঙ্গার জন্য ব্যবহৃত হয়। উটপাখি পানি ব্যতীত কয়েকদিন থাকতে পারে। এরা যে সমস্ত তৃণলতা গ্রহণ করে সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু পানি পেলে এরা পানি পান করে এবং ঘনঘন পানিতে স্নান করে।
উটপাখি তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান সহজেই সহ্য করতে পারে। এমনকি দিবা-রাত্রির ৪০০সে তাপের হেরফেরও এরা সহ্য করে থাকে। এরা এদের বিরাট পাখা দ্বারা পালকবিহীন দুই পাকে আবরিত করে রাখে যা তাপকে ধারণ করতে সহায়তা করে।
প্রজনন উটপাখি সাধারণত ২-৪ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়। স্ত্রী উটপাখি পুরুষের থেকে ৬ মাস আগেই প্রজননক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। প্রজনন ঋতু শুরু হয় মার্চ অথবা এপ্রিলের পূর্বভাগে এবং তা সেপ্টেম্বরের আগেই শেষ হয়। অবশ্য এই প্রজনন প্রক্রিয়া ভূ-অঞ্চলভেদে পার্থক্য হয়ে থাকে। একটি এলাকার প্রধান পুরুষ উটপাখি ২ থেকে ৭টি স্ত্রী উটপাখির সমন্বয়ে গঠিত “হারেমের” কর্তৃত্ব গ্রহণের জন্য মুখ থেকে একজাতীয় ফোঁস ফোঁস শব্দ করতে থাকে। বিজয়ী প্রধান উটপাখি প্রতিটি স্ত্রী উটপাখির সাথে মিলিত হয় তবে এদের মধ্যে প্রভাবশালী একটি পুরুষ পাখি প্রধান একটি স্ত্রী উটপাখির সঙ্গে জোড়া বাঁধে।
পুরুষ উটপাখি ঘনঘন পাখা আন্দোলিত করে তার সঙ্গিনীকে আকর্ষণ করে। এরপর তারা আড়ালে চলে যায় ও অনাহুত সকলকে বিতাড়িত করে।
সকল স্ত্রী উটপাখি একটি ৩০-৬০ সেমি (১২-২৪ ইঞ্চি) গভীর ও ৩ মিটার (৯.৮ ফুট) প্রশস্ত সাধারণ গর্তের মধ্যে ডিম পাড়ে। পুরুষ পাখিই কর্তৃক এই গর্ত খোদিত হয়। হারেমের প্রধান উটপাখি সর্বপ্রথমে ডিম পাড়ে। এরপর ডিমে তা দেয়ার সময় সে অন্যান্যদের ডিমগুলো ফেলে দিয়ে অবশিষ্ট ২০টি ডিমে (অধিকাংশ ক্ষেত্রে) তা দেয়া শুরু করে। একটি ডিম গড়ে ১৫ সেমি (৫.৯ ইঞ্চি) লম্বা, ১৩ সেমি (৫.১ ইঞ্চি) প্রস্থ এবং ১.৪ কেজি (৩.১ পাউন্ড) ওজনের হয়ে থাকে। ডিমের খোসা পুরু ও চকচকে ক্রিম বর্ণের হয়ে থাকে। ডিমের উপরিভাগে গর্তের ন্যায় ছোট ছোট দাগ থাকে। উটপাখির ডিম সর্বাপেক্ষা বৃহৎ হলেও তা অন্যান্য পাখির দৈহিক ওজনের অনুপাতে তুলনামূলকভাবে অনেক ছোট। স্ত্রী উটপাখি দিনে এবং পুরুষ পাখি রাত্রে পর্যায় ক্রমে ডিমে তা দেয়। দিনের বেলা উটপাখির বাসা যেন চিহ্নিত না করা যায় সে জন্য স্ত্রী উটপাখি বালু দ্বারা নিজেকে বে−ন্ড করে এবং কৃষ্ণ বর্ণের পুরুষ পাখিকে রাতের অন্ধকারে প্রায়শ সনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এভাবেই এরা শত্রু থেকে নিজেদেরকে আড়াল করে রাখে। সাধারণত ৩৫-৪৫ দিন পর্যন্ত ডিমে তা দেবার পর বাচ্চা ফুটে। পুরুষ পাখি বাচ্চাদেরকে খাদ্য খাওয়ানো শেখায় এবং এদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করে। বাচ্চাদের বেঁচে থাকার হার খুব কম হয়। এদের শত্র“ হচ্ছে, হায়েনা, শিয়াল, শকুন ইত্যাদি।
খামারে বাচ্চা প্রতিপালন ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চাদেরকে ঘরের মধ্যে প্রতিপালন করা প্রয়োজন। সদ্য ভূমিষ্ঠ বাচ্চাদেরকে ২৮-৩০০ সে তাপমাত্রায় রাখতে হয় এবং প্রথম সপ্তাহে দিনে ৩-৪ বার খাদ্য পরিবেশন করতে হয়। পরবর্তী ৩ সপ্তাহ রাত্রে ন্যূনপক্ষে ৩০০সে তাপমাত্রা থাকা প্রয়োজন। বাচ্চা প্রতিপালন কষ্টসাধ্য এবং ব্যয়বহুল।
বাচ্চাদেরকে খাদ্যের সাথে ইসেনসিয়াল এমাইনো এসিড, প্রোটিন, এনার্জি ও ট্রেস ইলিমেন্টস্ সরবরাহ করতে হয়।
উটপাখির বাণিজ্যিক মূল্য ইতিহাস থেকে জানা যায়, আজ থেকে ৫০০০ বছর পূর্বে মেসোপোটেমিয়া ও মিশরে উটপাখির বহুল ব্যবহার প্রচলিত ছিল। রোমানরা উটপাখিকে খেলাধুলা ও মাংসের জন্য ব্যবহার করতো। এদের পালক দ্বারা অত্যন্ত মূল্যবান পরিচ্ছদ প্রস্তুত করা হতো এবং চামড়া নানা কাজে ব্যবহৃত হতো। এসব কারণে অতিরিক্ত শিকারের ফলে অষ্টাদশ শতাব্দীর দিকে এদের সংখ্যা দারুণভাবে হ্রাস পেতে থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পালকের ব্যবসাতে ভাটা পড়ে। এর পর পরবর্তী পর্যায়ে চামড়া ও পালকের জন্য বাণিজ্যিকভিত্তিতে উটপাখি পালন শুরু হয় এবং ১৯৭০ এর পর থেকে তা ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। উটপাখির চামড়া খুব শক্ত বলে পরিচিতি। এদের মাংস স্বাদে চর্বিহীন গরুর মাংসের অনুরূপ। এতে চর্বি ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম এবং ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও আয়রণ উচ্চ মাত্রায় থাকে। কাঁচা মাংসের রং গাঢ় লাল বা লাল চেরী ফলের ন্যায় হয়ে থাকে যা গরুর মাংসের চেয়ে গাঢ় বর্ণের হয়।
কোনো কোনো দেশে মানুষ উটপাখির উপর চড়ে দৌড় প্রতিযোগিতার অংশ গ্রহণ করে। বিশেষ করে আফ্রিকাতে এ ধরনের ক্রীড়া মোটামুটি জনপ্রিয়। ঘোড়ার পিঠে মানুষ যেভাবে চড়ে অনেকটা অনুরূপভাবেই উটপাখিও চালিত হয় । উটপাখিকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটা কঠিন এবং এরা ঘোড়ার চেয়েও দ্রুতগ্রামী। ১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলিতে পর্যটকদের আকর্ষণ ও বিনোদনের জন্য “দি অস্ট্রিচ ফার্ম” উদ্বোধন করা হয়েছে যেখানে এ ধরনের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও মিনিসোটা, আইওয়া ও কেন্টাকির বিভিনড়ব পার্কে উটপাখির দৌড়ের প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজ্যেও এটা ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
প্রাকৃতিকভাবে বিচরণশীল উটপাখির সংখ্যা বিগত ২০০ বছরে মারাত্নক হারে হ্রাস পেয়েছে তবে পৃথিবীর বিভিন্ন বড় দেশের খামার ও পার্কে যত্নের সাথে এদেরকে প্রতিপালন করা হচ্ছে।
উটপাখির মাংস, চামড়া ও পালক যেহেতু অত্যন্ত মূল্যবান এবং বিদেশে এ সবের কদর ও চাহিদা অত্যধিক সেহেতু বাণিজ্যিকভিত্তিতে তা পালন অত্যন্ত লাভজনক হবে। আমাদের দেশে ইতোমধ্যে পোল্ট্রি, কোয়েল, কবুতর ইত্যাদি প্রতিপালন অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এই সাথে উটপাখি পালনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হলে এই খাত থেকেও প্রভূত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। উটপাখি অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণ এবং এদের জন্য খাদ্য খরচ বাবদ ব্যয়ও খুব বেশি নয়। এদের রোগ-ব্যাধিও খুব কম হয়ে থাকে। এমতাবস্থায় এই পাখিকে বাণিজ্যিকভিত্তিতে প্রতিপালনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

Sunday, December 4, 2016

টিকা প্রদান কর্মসূচি অনুসারে বিভিন্ন রোগের টিকা প্রদান

আমাদের দেশে কিছু মানুষ আবেগের বশে কৃষি কাজে আসে । কোন রকম তথ্য – উপাত্ত সংগ্রহ না করেই , প্রশিক্ষণ ছাড়াই খামার প্রতিষ্ঠা করে ফেলে এবং খামার প্রতিষ্ঠার কোন নিয়মের তোয়াক্কা করে না । মানে না অভিজ্ঞদের পরামর্শ। যার ফল বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই লোকসান গুনতে হয় । খামার স্থাপনের আগে কিছু প্রশিক্ষণ , বাজার চাহিদা , ঝুঁকি ও নিরাপত্তা সম্পর্কে জেনে শুনে শুরু করলে, লাভের সম্ভবনা বেড়ে যায় ।
টিকা প্রদান ও তার গুরুত্বঃ
টিকা প্রদান কর্মসূচি অনুসারে বিভিন্ন রোগের টিকা প্রদান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয় এবং সংক্রামক রোগ হতে মুরগিকে রক্ষা করা যায়। টিকাদান ফলপ্রসূ হলে রোগের প্রাদুর্ভাব খুব কম হবে এবং মৃত্যুর হার সহনীয় পর্যায় রাখা যাবে।
লেয়ার মুরগির টিকাঃ মারেক্স, রাণীক্ষেত, গামবোরো, ব্রংকাইটিস, বসন্ত, সালমোনেলা, করাইজা ।
ব্রয়লার মুরগির টিকাঃ মারেক্স, রাণীক্ষেত, গামবোরো
টিকা প্রদানের পূর্বে সতর্কতাঃ
* মুরগি ধরার সময় যত্ন সহকারে ধরতে হবে ।
* মুরগির যে কোন ধরনের ধকল মুক্ত অবস্থায় টিকা প্রয়োগ করতে হবে ।
* অসুস্থ মুরগিকে টিকা দেয়া যাবে না ।
* টিকা প্রদান উপকরণ ফুটন্ত পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে ।
* আবহাওয়া যখন ঠান্ডা সেসময়ে টিকা প্রদান করতে হবে।
টিকা ব্যবহারের সাধারণ নিয়মাবলীঃ
* প্রতিষেধক টিকা সবসময়ই সুস্থ পাখিকে প্রয়োগ করতে হয় ।
* সংক্রামক রোগ বা কৃমিতে আক্রান্ত পশু-পাখিকে টিকা প্রয়োগ করা যাবে না। তাতে কাঙ্খিত মাত্রায় প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয় না বরং পাখির আরও ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে ।
* টিকা বীজ কোন অবস্থাতেই সূর্যালোকের সংস্পর্শে আনা যাবে না ।
* ব্যবহারের সময় মিশ্রণ এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাত্র, সিরিঞ্জ-নিড্‌ল, ব্যবহৃত তরল পদার্থ, টিকা ব্যবহারকারীর হাত ইত্যাদি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও বীজাণুমুক্ত হওয়া প্রয়োজন।
* জীবাণুমুক্তকরণের জন্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা যাবে না ।
* প্রতিষেধক টিকা সকালে বা সন্ধ্যার সময় ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রয়োগ করা ভাল ।
* ব্যবহারের জন্য গোলানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা ব্যবহার করে ফেলা উচিত। গোলানোর পর গরমের দিনে ১ ঘন্টা এবং শীতের দিনে ২ ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করে ফেলতে হবে ।
* মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা টিকার সাধারণ রং পরিবর্তিত হয়ে গেলে সে টিকা আর ব্যবহার করা যাবে না ।
* টিকা পরিবহনের ক্ষেত্রে ঠান্ডা অবস্থায় পরিবহন নিশ্চিত করা প্রয়োজন । তাপ প্রতিরোধক পাত্রের মধ্যে বরফ দিয়ে টিকা বীজ পরিবহন করতে হয়। বরফ গলে গেলে পুনরায় বরফ দিতে হয় ।
* ব্যবহারের সময় টিকা মিশ্রণের পাত্র ছায়াযুক্ত স্থানে বরফ দেওয়া বড় পাত্রের মধ্যে রাখা যাবে না ।
* ভাইরাস জনিত রোগ প্রতিরোধক টিকা প্রয়োগকালে টিকা প্রয়োগ স্থান পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে নিতে হবে এবং এই জন্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না ।
* গোলানো অব্যবহৃত টিকা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য রাখা যাবে না।
টিকা প্রদান কর্মসূচী (লেয়ার মুরগির জন্য)
বয়স —– রোগের নাম ——–ভ্যাকসিনের নাম ——টিকা প্রদানের পদ্ধতি
১ দিন—– মারেক্স রোগ — মারেক্স ভ্যাকসিন —–চামড়ার নীচে ইজেকশন
২ দিন —-গামবোরো রোগ –গামবোরো ভ্যাকসিন (লাইভ)—চোখে ফোঁটা (প্যারেন্ট মুরগির টিকা প্রদান করা না থাকলে)
৩-৫ দিন–রানীক্ষেত রোগ —-বি, সি, আর, ডি, ভি —দুই চোখে ফোঁটা (প্যারেন্ট মুরগির টিকা প্রদান করা থাকলে ৭ থেকে ১০ দিন বয়সে)
৭ দিন — ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস —আই, বি, ———— চোখে ফোঁটা
১০-১৪ দিন–গামবোরো রোগ —গামবোরো ভ্যাকসিন –এক চোখে ফোঁটা
২১-২৪ দিন–রানীক্ষেত রোগ —-বি, সি, আর, ডি, ভি –দুই চোখে ফোঁটা
২৪-২৮ দিন-গামবোরো রোগ –গামবোরো ভ্যাকসিন —এক চোখে ফোঁটা
৩০ দিন–ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস —আই, বি, ———— চোখে ফোঁটা
৩৫ দিন–মুরগি বসন্ত ——-ফাউল পক্স ভ্যাকসিন —– চামড়ার নীচে সুঁই ফুঁটিয়ে
৫০ দিন —–কৃমি —————–কৃমির ঔষধ —–খাদ্য অথবা পানির সাথে
৬০ দিন –রানীক্ষেত রোগ –আর, ডি, ভি —চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন
৭০ দিন–ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস —আই, বি —চোখে ফোঁটা বা পানির সাথে
৮০-৮৫ দিন–কলেরা -ফাউল কলেরা ভ্যাকসিন –চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন
৯০-৯৫ দিন–ইনফেকসাস করাইজা –আই, করাইজা ভ্যাকসিন — চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন
১১০-১১৫ দিন–কলেরা-ফাউল কলেরা ভ্যাকসিন-চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন
১৩০-১৩৫ দিন–ইনফেকসাস ব্রংকাইটিস, রানীক্ষেত, এগড্রপসিনড্রম,সমন্বিত টিকা
—– চামড়ার নীচে বা মাংসে ইনজেকশন
১৩০-১৩৫ দিন—কৃমি ——-কৃমির ঔষধ ——–খাদ্য অথবা পানির সাথে
তবে খেয়াল রাখতে হবে: প্রয়োজনবোধে খাদ্যের সাথে ৬ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ককসিডিওসিস রোগ প্রতিরোধের জন্য ককসিডিওস্ট্যাট ব্যবহার করতে হবে। ৫০ দিন বয়সে কৃমির ঔষধ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। ১৩০ থেকে ১৩৫ দিন বয়সে ঐ ঔষধ পুনরায় খাওয়াতে হবে।
তবে এই তালিকা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রোগের প্রার্দুভাবের ইতিহাস, টিকার প্রাপ্যতা ও স্থানীয় পরিবেশ পরিস্থিতির উপর নিজ নিজ খামারের জন্য নিজস্ব তালিকা প্রস্তত করতে হবে। টিকা সবসময় প্রস্ততকারীর নির্দেশমত ব্যবহার করতে হবে। সকল প্রকার টিকা ও ঔষধ প্রয়োগের পূর্বে পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
কিছু তথ্য — কৃষি তথ্য আপা থেকে নেয়া ।
* সকল কৃষক ভাই – বোনদের জন্য শুভ কামনা —

Saturday, December 3, 2016

উন্মুক্ত হলো ময়ূর ও হরিণ পালন, করতে বাধা নেই বাণিজ্যিক খামার



বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে কিনতে পারবেন ময়ূর ও হরিণ । বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে এ দুই প্রাণী কেনার জন্য সব ধরনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে হরিণ প্রতিটি ৩৫ হাজার টাকা ও ময়ূর এক জোড়া ৫০ হাজার টাকায় কেনা যাবে। হরিণ কেনার লাইন দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। এমপি, সরকারি কর্মকতা ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা এ লাইনে শরিক হয়েছেন।

গত ছয় মাসে হরিণ কেনার জন্য বন বিভাগের বন্যপ্রাণী শাখায় চিত্রল হরিণের জন্য ৮৪২টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে প্রভাব খাটিয়ে ৯১ জন ও খামারি পর্যায়ে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে হরিণ সংগ্রহ (কেনার) করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনেকে কেনার জন্য ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানাসহ কয়েকটি স্থানে আবেদন করেছেন। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গতকাল পর্যন্ত তার অফিসে বর্তমান জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকতা ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীসহ ১৯৮ জন ব্যক্তি চিত্রল হরিণ কেনার আবেদন করেছেন।

আবার অনেকে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী শাখা থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করেছেন। সংগ্রহকারীদের মধ্যে সংসদ সদস্যও রয়েছেন। আরও রয়েছেন কয়েকজন আমলা ও ব্যবসায়ী। দেশে এখন ব্যক্তি ও খামারি পর্যায়ে ২৫৫ জন হরিণ পালনের লাইসেন্স পেয়েছেন। যারা এখনো লাইসেন্স সংগ্রহ করেও চিত্রল হরিণ সংগ্রহ করতে পারেননি তারা এখন বিভাগীয় বন্যপ্রাণী কর্মকর্তার অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। দেশে চারটি বিভাগীয় বন্যপ্রাণী কর্মকর্তার অফিস রয়েছে। এগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেছেন, লাইসেন্সের মাধ্যমে ব্যক্তি ও খামারের জন্য প্রতিটি হরিণ ৩৫ হাজার টাকায় কিনতে পারবেন। কেনার পরও কেবল নির্ধারিত ফি দিয়ে ব্যক্তি ও খামারি পর্যায়ে লাইসেন্স নেওয়া যাবে। আমরা আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে হরিণ বিক্রি করছি। হরিণের সংখ্যা ১০ এর বেশি হলে খামারের লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া বয়স্ক বা রোগাক্রান্ত হলে ভেটেরিনারি সার্জনের অনুমতি নিয়ে হরিণের মাংস খাওয়া যাবে। এ ছাড়াও অন্য আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) সংশোধন আইন-১৯৭৪ এর আওতায় ৬ জানুয়ারি থেকে চিত্রল হরিণ লালন-পালন সংক্রান্ত নয়া নীতিমালা প্রণয়ন করে। এই নীতিমালা সমগ্র বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে অন্য প্রজাতির হরিণ এ নীতিমালার আওতাভুক্ত হবে না। চিত্রল হরিণ লালন-পালনের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফি দিয়ে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে খামার ব্যতীত চিত্রল হরিণ লালন-পালনের লাইসেন্স ফি ৫০০ টাকা। মেট্রোপলিটন এলাকায় লাইসেন্স ফি ৫ হাজার টাকা। জেলা সদরের খামারের জন্য লাইসেন্স ফি ২ হাজার ৫০০ টাকা। অন্য এলাকায় প্রতি খামারের জন্য লাইসেন্স ফি ২ হাজার টাকা।

  • এ ছাড়াও প্রতি হরিণের পজেশন ফি ১০০ টাকা। বার্ষিক নবায়ন ফি ১০০ টাকা। কোনো ব্যক্তির পালিত হরিণের সংখ্যা ১০টির বেশি হলে তাকে খামারির লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। লাইসেন্স করার আগে ও পরে হরিণ কেনা যাবে। তবে হরিণ কেনার ১৫ দিনের মধ্যে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক। একইভাবে ময়ূরও কেনা যাবে এ প্রক্রিয়ায়। অনুমতি পেলে ব্যক্তি বা খামারির প্রতিনিধি চিড়িয়খানা বা বন বিভাগের নিয়ন্ত্রিত স্থান থেকে এ হরিণ ও ময়ূর কিনতে পারবেন।

কি করে বোঝা যাবে একটা ভাল জাতের গরু।







একজন খামারির কথা.........
কি করে বোঝা যাবে একটা ভাল জাতের গরু। শুধুই কি গায়ের রং নাকি আরো বিষয় আছে যে গুলো আমাদের জানা দরকার। আমার কাছের কিছু বন্ধুরা জানতে চাই কিন্তু আমি নিজেও অনেক অনভিজ্ঞ।তবে আমার খুদ্র জ্ঞ্যানে আমি গরু কেনার সময় যে বিষয় গুলো দেখি তা হল:

বকনা বাছুরের ক্ষেত্রে: গায়ের রং হলস্টন ফ্রিসিয়ান গরুর মত কিনা, বয়স অনুযায়ী এর সঠিক ব্রিদ্ধি হয়েছে কিনা, এর গায়ের পশম গুলো উজ্ঞল আর চামড়া পাতলা, জিভ সাদা কিনা, অসুস্থ গরুর চোখের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে, চোখ হতে হবে উজ্জল, সুস্থ বাছুর চঞ্চল আর ছুটাছুটি করবে, মাথা ছোট-ঘাড় লম্বা থাকবে। অসুস্থ বাছুর বেশীর ভাগ সময়ই বসে থাকবে আর গায়ের পশম গুলো খাড়া হয়ে থাকবে এবং খেতে চাইবেনা। ভাল জাতের বাছুর কেনার সময় এর মা কতটুকু দুধ দিত যা জানতে পারলে ভাল।

গাই গরুর ক্ষেত্রে: গায়ের রং হলস্টন ফ্রিসিয়ান গরুর মত কিনা, সকালে-বিকালে মিলে কতটুকু দুধ পাওয়া যায়, ভাল জাতের সদ্য প্রথম বিয়ানের গাই গরুর ২ দাত মাত্রই ওঠে থাকবে , মাথা ছোট, ঘাড় লম্বা, চোখ উজ্জল, শরীরের পিছনের অংশ যথেষ্ট ভারী আর সামনের দিক সরু লম্বাটে হবে। গরু হবে অনেক উচা লম্বা, জিভ সাদা।বেশী দুধ পেতে হলে ২ বিয়ানের গরু কেনাই ভাল। প্রথম বিয়ানে ৪ দাত হলে বুঝতে হবে গরুর প্রথম বীজ দেরি করে ধরেছে আর বয়স্ক কিছুটা। গরুর দাত আর শিং দেখেই একমাত্র বোঝা যাবে এর বয়স কত। ভাল দুধের গরুর ওলান থেকে পেট পর্যন্ত যে রগ গুলো দেখা যায় তা বেশ স্পষ্ট হয়ে মোটা আক্রিতির থাকবে।

গাভীন গরুর ক্ষেত্র: গায়ের রং হলস্টন ফ্রিসিয়ান গরুর মত কিনা, মাথা ছোট, ঘাড় লম্বা, শরীরের পিছনের অংশ যথেষ্ট ভারী আর সামনের দিক সরু লম্বাটে হবে। গরু হবে অনেক উচা লম্বা, জিভ সাদা, চোখ উজ্জল। প্রথম বিয়নের ৫-৬ মাসের গাভীন গরুর কোন দাত উঠবেনা আর ৯-১০ মাসের গাভীন গরুর ২ দাত হবে। গরুর ওলানের আকার বড় এবং নরম ঢিলেঢালা হবে। অনেক সময় বড় ওলান হলেই যে গরু দুধ বেশী দেবে এই ধারনা করে আমরা বেশী দাম দিয়ে কিনে ফেলি গরু বাচ্চা দেবার কিছুদিন আগেই। ওলান বড় হলেই যে দুধ বেশী দেবে এই ধারনা ভুল।
এছাড়া গরু কেনার সময় হাটায়ে দেখতে হবে পায়ে কোন সমস্যা আছে কিনা। অসুস্থ গরু বেশীরভাগ সময় বসে থাকবে আর কিছুক্ষন দাড় করিয়ে রাখার পর আবার বসে পরবে, খেতে চাইবেনা। দুই খুর ভাল করে দেখতে হবে কোন রোগ আক্রান্ত হয়েছে কিনা। কিছু গরুর দুই খুরের মাঝে কিছু মাংস বাড়তি থাকে এমন হলে এই গরু গুলো খুরার এক জাতীয় রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে।

আমি এগুলো কোন বই পড়ে শিখিনি, গ্রামে গ্রামে হেটে হেটে মানুষের সাথে কথা বলে শেখা।তাই অনেক ভুল থাকতে পারে। তবে আমার অনেক অভিজ্ঞ বন্ধুরা আছেন যারা লেখাপড়া করেছেন তাদের থেকে আরো ভাল কিছু জানতে চাই। শেয়ার করে জানাবেন। এটা অনেকের জিজ্ঞসা।

বি:দ্র: কিছু ভাল জাতের গরুর ফটো দিলাম যা বিভিন্ন জায়গা আর কিছু ফেসবুক বন্ধুদের থেকে কপি করা উদাহারন হিসেবে নেয়া যাতে করে আমরা গরু কেনার সময় এই রং গুলোর মতই মিলিয়ে দেখে কিনতে পারি, হুবহু এক রকমই হবেনা তবে অনেকটা এসবের মতই হবে।


(১) সল্প বাজেটে আপনি কড়িগ্রামের ভুরুংগামারী, নাগেশ্বরী, যাত্রাপুরা, লালমনিরহাটের বড়বাড়ী, দিনাজপুরের কাহা‌রোল, খুলনার বেতাগা হাট থেকে নিতে পারেন।
(২) মধ্যম বাজেটে এর মধ্যে শাহীওয়াল/শংকর জাতের ষাড় কিনতে চান তাহলে বগুড়ার বুড়িগন্জ, ঘোড়াধাপ, মহাস্থান, ডাকুমারা, জয়পুরহাট, পাবনার চতুর্বাজার।
(৩) বাজেট যদি ৫০,০০০ টাকার উপরে হয় তাহলে অবশ্যই কুষ্টিয়ার আলমডাঙ্গার হাট, বাইল্যাপারা, চুয়াডাঙ্গার শিয়ালমারী উত্তম।
(৪) শুধু বকনা, গাভীন, দুধের গাভী কিনতে চাইলে বগুড়ার দুপচাচিয়া থানার ধাপের হাট উত্তম। ঢাকার কাছে পাড়াগাঁও, কালামপুর, আশুলিয়া, খুলনার শাহাপুর হাটে ও মাঝে মধ্য ভাল গাভী পাওয়া যায়।
(৫) শুধু ইন্ডিয়ান বলদ ও নেপালী বড় গরু কিনতে চাইলে অবশ্যই বেনাপোলের পুটখালী এবং সাতক্ষীরার বৈখালী যেতে হবে।
(৬) যদি দেশী লাল বলদ গরু কিনতে চান তাহলে প্রতি শনিবার জয়পুরহাট যেতে হবে।
(৭) যদি শুধু দেশী বাছুর কিনতে চান তাহলে যেতে হবে চাঁপাই এর সোনাইচন্ডী ও তর্তিপুর হাট।
(৮) মহিষ কিনতে হলে কুষ্টিয়ার আলমডাঙ্গা এবং চাঁপাই এর সোনাইচন্ডী হাট।
(৯) যদি শুধু অষ্টেলিয়ান এবং ক্রস বাছুর কিনতে চান তাহলে পাবনার ঈশ্বরদীর অরনখোলার হাট।
(১০) এছাড়া রাজশাহীর সিটি হাট, যশোরের সাতমাইল এ ভাল গরু আগে উঠত কিন্তু ইন্ডিয়ান গরু না আসাতে ওখানে এখন তেমন ভাল গরু উঠে না।
(১১) কেউ যদি দেশী জাতের খাটো বুট্টী টাইপের গরু কিনতে চান তাহলে অবশ্যই দিনাজপুর এবং রংপুর এর হাট গুলো থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
(১২) আরসিসি কিনতে হলে যেতে হবে চট্টগ্রাম এর সাতকানিয়া, আনোয়ারা উপজেলায়। এই জাতটা দীর্ঘমেয়াদের জন্যে ভাল।
এর বাইরে সাভার, যশোর, চট্রগ্রাম মিলিটারী ফার্মে ভাল জাতের বাছুর ‍(৪-১২ মাস) নিলামে কিনতে পাওয়া যায়। নিলামে ৭/৮ এর লট (ভাল মন্দ মিলিয়ে) কিনতে হয়। সাধারনত বছরে ৩/৪ বার নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। কোন দালাল এর মাধ্যমে না যেয়ে সরাসরি নিকটস্থ ফার্মে যোগাযোগ করলে / নিয়মিত ই্ত্তেফাক পত্রিকায় নজর রাখলে নিলামের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়। নিলামে কেনা গরুর দামের উপর ভ্যাট ও অগ্রীম আয়কর পরিশোধ করতে হয়।
আরও কোন তথ্য / মতামত কারো কাছে থাকলে দয়া করে জানাবেন।